সাতকরা’র আচার

৳ 190.00

→নাম: সাতকরার আচার।
→পরিমাণ: ৩৫০ গ্রাম [ অধিকাংশ বয়ামেই অবশ্য ৩৬৫ গ্রাম করে দেওয়া হয়েছে ]
→ সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য: ১৯০/= [ একশত নব্বই টাকা ]
.
→ কি দিয়ে খেতে সবচে এপিক লাগবে:
পাতলা ডাল-ভাতে অল্পখানি মশলামাখা ঝোল নিয়ে ভালো করে মেখে ইয়া বড় লোকমা । এছাড়া, গরুর গোস্ত রান্নার সময় অল্প তেলসহকারে দুইপিস সাতকরার টুকরা দিয়ে দিলে রান্নাটা হাই-লেভেলে চলে যাওয়ার কথা । মাছের মাথা আর কাটাকুটি দিয়ে রান্না করা মুড়িঘণ্টের সাথে বড্ড খাপ খায় বলে !
→ কাদের জন্য:
যারা টক-হেটার, তাদের জন্যে তো নয় অবশ্যই!! সাতকরার টকটক ভাব, সরিষা তেল আর সরিষাবাটার যুগপৎ ঝাঁজ, কাচা-শুকনো দুই পদের মরিচের ঝাল যারা সইতে পারবে ; সাতকরা তাদেরকেই জানাবে আমন্ত্রণ !
→মূল উপকরণ:
সাতকরা, সরিষার তেল, রসুন, দুই রকমের মরিচ।
→সহকারী উপকরণ:
সিরকা, সরিষা বাটা,পাঁচফোড়ন, হলুদ গুড়া,মরিচগুড়া, লবণ, অল্পখানি চিনি ।

Out of stock

Description

  • রাত জেগে পাহারা দিয়েছি, দেখি কিভাবে চুরি হয়!!
    .
    ঘটনার শুরুয়াদ আজ হতে ৭-৮ বছর আগে । খালামনি/আম্মু’র হাতে ভাত খেতে অভ্যস্ত এই আমাকে বকাঝকা করে শেখানো হলো হাত দিয়ে খাওয়ার নিয়মকানুন -_- তো, মাছ বাছা-টাইপ ভয়াবহ পরিস্থিতি এড়াতে মাঝেমধ্যেই প্লেটে তোলা মৎস গোপনে আবার পাতিলায় চালান করে দিয়ে এত্তগুলা করে ডাল নিয়ে নিতাম পাতে। কিন্তু শুধু ডাল কিভাবে খায়? 🙁 হাতের কাছে যেই আচারের বয়াম পেতাম, ডালমাখা ভাতের উপরে একদম উপুত করে নিতাম যে 😀
    .
    এরই মাঝে মামা একদিন গেলো সিলেট ট্যুরে । ফিরতি লাগেজে বেশ কিছু খাদ্যদ্রব্যের সাথে নিকোবিনা’র সাতকরা আচার-ও ছিলো [ যদ্দুর খেয়াল আছে, প্রতিষ্ঠানের নাম-টা সেরকম ই ছিলো ] । বয়ামের ঢাকনা খুলতেই ঘ্রাণের ধাক্কায় থতমত খেয়ে গিয়েছিলাম, অনন্যসাধারণ লেভেলের লেবু লেবু ঘ্রাণের সাথে বাগাড় দেওয়া মসলার ক্ষুধা-জাগানেওয়ালা অনুভূতি ; সেই বোতল শেষ হওয়ার আগ অব্দি প্লেটে নেওয়া ভাতের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছিল বৈ কি!
    .
    তবে একটা কিন্তু ছিল। বয়ামের আচারের মূল যেই উপাদান, সেই সাতকরা-গুলো চিবিয়ে খাওয়ার পক্ষে অতিরিক্ত তিতা ছিলো আমার টেস্টবাড অনুযায়ী ( নো অফেন্স প্লিজ । পারসোনাল অপিনিয়ন, মানুষ থেকে মানুষ ভ্যারি করতেই পারে), তাই ডালে শুধু ত্যাল আর ঝোল নিতাম আচারের, সাতকরার কুচিকুচি কোয়াগুলো [ সাধারণ জ্ঞান : বলুন ত সাতকরার নাম সাতকরা কেনো?? উত্তর: যদ্দুর জানি, সিলেটে কোষকে করা বলা হয়, আর সাতকরায় রয়েছে সাতটি করা ; তাই সংকুচিত হয়ে শব্দটা সাদা-বাংলাভাষায় সাতকরা, আর সিলটি মাতে “হাতকরা” হই গেসে ] শেষ করতো বাকিরা। সেই কিন্তুর প্রতিকার খুজতেছিলাম। সমাধান যে হাতের মুঠোয়, তা বুঝিনি ঘুণাক্ষরেও!!
    .
    সিলেটে খুব খুব পছন্দের আর মনের দিক থেকে বড্ড বেশি আপন এক ক্রেতাভাইয়া’র বসবাস। গত বছর আচমকা সেই ভাইয়া তাদের ঐতিহ্য, বেশ কয়েকটা আস্ত সাতকরা পাঠায়ে দিলেন কুরিয়ার করে!! আনন্দে লাফাতে লাফাতে পিছলা খেতে যাচ্ছিলাম, যখন খেয়াল আসলো, আয় হায় এই আনাম বড়সাইজের “না-জাম্বুরা না-লেবু”র আচার কিডায় বানাবে :'( পরেরদিন ভার্সিটি থেকে বাসায় ফিরে প্লেটে সাতকরার টাটকা আচার দেখে চমকে ওঠা-টাই স্বাভাবিক :O আম্মু স্ট্রাইকস উইথ হার ওউন, ইউনিক রেসিপি ^_^ এবং, কিভাবে যেনো আম্মানি মনে রেখেছিলো গতবার কি হয়েছিলো, তাই সিরকা দিয়ে জ্বাল দিয়ে কিভাবে যেনো তীব্র তিতকুটে মুখ কুচকানো ফিলিংস-টা গায়েব করে ফেলেছিলো সাতকরার , ঝোল-তেল-কোয়া সবটুকুই খাওয়ার যোগ্য ছিলো ।
    .
    গত এক বছরে, অগণিতবার [ ৫০ এর উপরে হবে, এইটুক বলতে পারি ] চামিচ চামিচ হাতকরা ঢালা হয়েছে ভাতের উপরে, কিছু একান্ত আপন মানুষকে উপহার দেওয়া হয়েছে সেই আচার ; সবাই স্রেফ পাগলায়ে গিয়েছিলো ঘ্রাণে, আর টেস্টের কথা কি ই বা বলবো। কিন্তু দুনিয়ার নশ্বর সবকিছুর মতই, সাতকরার আচার-ও ফুরায়ে গেলো বছরের শেষ দিকে এসে!! এবার তাই মিনহাজ ভাইয়াকে অনেক অনেক প্যারা দিয়েছি, বেশ কিছু সাতকরা নাহ, এবার বিশাআআল পরিমাণে বস্তাভর্তি আস্ত সাতকরা পাঠানোর লাগিয়া *_* উপহার নহে , এবার আত্রচি কিনিয়াই লইবে, হু !
    .
    আলহামদুলিল্লাহ, গতকাল হাতে এসেছে চালতাকৃতি জিনিসগুলি, অসুস্থ আম্মুনিকে পটায়ে রাজি করায়েছি এবার নিজেদের জন্য ছাড়াও আরো কিছু মানুষ যেনো এর ঘ্রাণে-স্বাদে পাগলায়ে যেতে পারে সেই ব্যবস্থা করার জন্য । আজ বিকালে বাসার দরজা দিয়ে ঢুকে, আমি নিজকে সামলাতে পারিনি সাইট্রাসি ঘ্রাণের তীব্রতায় ^_^ ২০ ফিট দূরের রান্নাঘর থেকে ভেসে আসছে কয়েক পদের ঘ্রাণ ; কাটা সাতকরা’র লেবুটে সুবাস, সিরকায় সিদ্ধ হতে থাকা সাতকরার কোয়াগুলোর ঝিমিয়ে পরা অথচ মনদোলানো বাসনা, ঝাঁজ সরিষার তেলে গরম হতে থাকা রসুন-পাচফোড়ন-পাকামরিচ-সরিষাবাটা’র অদ্ভুতুড়ে স্মেল —- হায়, লেখার বাঁধনে ঘ্রাণের মিশেলটাকে বাঁধতে পারতেসি না কিছুতেই 🙁
    .
    পুরো আচার প্রসেসে পানির ছোঁয়া লাগেনি বলতে গেলে, পানির উপস্থিতি অল্পপরিমাণে রইলেও মেয়াদ উত্তীর্ণের আগেই বয়ামের ভেতরে ছত্রাক ধরার আশংকা রয়ে যায় বলে । রাত বাড়তে থাকলেও আচার তখনো মাঝপথে, অল্পক্ষণ ভুনা হয়েছে তেল দিয়ে, এখনো আরো কয়েকঘণ্টার ‘অল্প আঁচে কষা কষা করা’ বাকি । আম্মু ঘুমুতে যাওয়ার আগে বলে দিলো, ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রেখে যাচ্ছি, সম্ভব হলে দেখিও যে ঢাকনার ভেতর দিকটায় জলীয় বাষ্প জমে নাকি, সেটা মুছে দিলে ভালো হয়, তাহলে চুইয়ে হলেও একফোটা পানিও পড়বে না আচারে ।
    .
    হতভম্ব হয়েছিলাম এমন দূরদর্শিতায়, তবে প্রতিজ্ঞা-ও করেছিলাম, পুরো কাজটা ত আম্মু-ই করলো, এই একটা ছোট্ট কাজ চাইলে করতেই পারি… বুঝিনি ব্যাপারটা এতো কঠিন হবে!!! প্রতিবার ঢাকনার ভেতরের দিক মুছা’র জন্য সরায়েছি, আর ধকক করে সাতকরা সুবাস এসে পেটকে জানান দিয়ে গেছে ক্ষুধার ব্যাপারটা। খুব ইচ্ছে করেছে এইখান থেকে অল্প কয়টা কোয়া চেখেই দেখি না , কি আর হবে 🙁 সারারাতে এভাবে ছয়-সাতবার আটকাতে হয়েছে নিজের বাড়ায়ে দেওয়া হাতকে!
    .
    ফজরের একটু আগে আম্মু উঠেছে, আর সাথেসাথে দায়িত্ব বুঝায়ে দিয়েছি তাকে। নাও আম্মা, এতোক্ষণ অনেক কষ্টে সামলায়েছি নিজেকে, এবার বাকি দায়িত্ব তোমার, এই আচারগুলাকে পাহারা দিবা আমার কাছ থেকে, অন্তত পুরোপুরি রান্না হবার আগ অব্দি 😀 এরপরের চিন্তা করার দরকার নাই আর, নিজের লাগিয়া সারাবছরের স্টক সরায়ে রাখার পরে ক্রেতাভাইদের জন্য যে কয় বোতল ছাড়তে পারব, সে কথা ভেবে এখন ই আফসোস লাগতেছে 😛

Additional information

পরিমাপ

৩৮০ গ্রাম

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “সাতকরা’র আচার”

Your email address will not be published.