Description
সপ্তাহ কয়েক আগের কথা । ইম্পোরটার আংকেলের সাথে দেখা করতে গেলাম ক্লাস শেষ করে । টুকটাক কথাবার্তা হচ্ছে , সেই সময়ে বেশ খানিকটা দূরে কি যেন চিকচিক করে উঠলো। নজর দিয়ে দেখি, স্বচ্ছ কাচের ইয়া বড় স্যাম্পল বোতলে নতুন একটা কিছু রাখা। কেনো যেনো মনে হলো, এই এত দূরে থেকেও ঘ্রাণ ভেসে আসতেছে বোধহয়!!
আলতো করে লালচে ছিপি খুললাম। আল্লাহর কসম, সাথে সাথে মাথায় একটাই কথা ঘুরেছে , আমার সবচাইতে পছন্দের ঘ্রাণ এখন আমার নাকের সামনে উড়োউড়ি করছে!! সাথে সাথেই মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিলো , কারণ উকি দিয়েছিলো ( অনাকাংখিত ভাবে) ব্যবসায়িক সত্বাটা — ক্রেতাভাইদেরকে এটার সাথে পরিচয় করায়ে দিলে তারাও এটার গভীর প্রেমে পড়ে যাবে আমি নিশ্চিত, তাহলে স্টকে থাকা বাকি ৫৪ রকমের পারফিউমের ভবিষ্যত কি হবে!!
স্যাম্পল হিসেবে তার কাছে খুব কম ই ছিলো, পুরোটুকু নিয়ে এসেছিলাম। এরপর গত দুই সপ্তাহ হলদে তরল রত্নটুকু আমার আহ্লাদের বস্তু হয়ে উঠলো আরকি! বেছে বেছে খুব পছন্দের কিছু ভাইয়াকে হাদিয়া পাঠায়ে দেওয়া হলো, দুই ক্রেতাভাই তো কেবল নাম শুনেই জোর করে কিনে নিলেম। তিনদিন ওকে লাগায়ে ভার্সিটি গিয়েছিলাম ; কমপক্ষে ৭-৮ বন্ধু, লাগানোর ৫/৬ ঘন্টা পরেও একই উৎসাহের সাথে জিজ্ঞাসা করে গেছে, আতরচি এই ঘ্রাণটার বিস্তারিত জানাও….
সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম স্বৈরচারী টাইপের, এটার খোজ কাওকেই দেবো না, মাঝে মাঝে উপহার দিয়ে চমকিয়ে দেবো!! ক্রেতাভাই ও হাদিয়াপ্রাপ্ত ভাইদের অন্য লেভেলের রিভিউগুলো ক্রমাগত আমার সিদ্ধান্তে অনুতপ্ততার ছোয়া দিয়ে গেছে। শেষ পয্যন্ত নিজেকে কেনো যেনো ঠগবাজ মনে হতে শুরু করলো, নিজের জন্য যা ভালো মনে করছি তা থেকে অন্য মুসলিম ভাইকে বঞ্চিত করবো — এর আগে আর ভাবতে পারিনি 🙁
ভালো-খারাপ মেশানো পরীক্ষাটা দিয়েই তাই খুব বেশি দেরি করি নি, ইম্পোরটার আংকেলের সামনে গিয়ে যেই বিশাল পরিমাণ কিনার অর্ডার দিলাম, তার সাথে সাথে আমি নিজেও হতবাক, এ আমি কি বলছি!!! বলার ভংগি থেকেই তিনি বুঝে ফেলেছিলেন কতটা পছন্দ হয়েছে এটা, মুচকি হেসে দাম-টা বেশ কমায়ে দিলেন ^_^ আনন্দ আরেকটু বেড়ে গেলো, ক্রেতাভাইদের হাতে সহনীয় দামে তুলে দেওয়ার আনন্দ আরকি 🙂
কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই আকাশ ভেংগে বৃষ্টি পড়তে লাগলো রিক্সাতে বসা টাইপরত আত্রচির উপর, লেখা থামায়ে হুডটাকে নামায়ে বৃষ্টিকে গায়ে লাগাতে লাগাতে মনে ভেসে উঠলো সেই কথাটুকু… আলহামদুলিল্লাহ্ ফর এভ্রিথিং!
Leave feedback about this