বর্ণনা
রিক্সাওয়ালা মামা কয়েকবার বললেন, ' ভাই এটা কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টি, প্লাস্টিকটা বাইর কইরাই দিই, ঠান্ডা লাইগা যাইব কইলাম ' । নটরডেমের সামনে ধুলাউড়া বৃষ্টি খেতে খেতে জবাব -- সমস্যা নাই মাম্মা, আপনি চালান আপনার পংখিরাজ, আজকে সব মনখারাপের ধুয়ে যাওয়ার দিন ! . কি এমন হয়েছে আজ? কই, প্রচন্ড ঘুম চোখে নিয়ে ঠিক ই তো স্কুলে যেতে হয়েছে [ ভার্সিটি কে ইদানিং স্কুল বলেই ডাকি। অবশ্য স্কুল ও ত এত স্ট্রিক্ট ছিলোনা ] , ল্যাবে সবার সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে গেলেও শুধু আমাদের গ্রাফ কম্পিউটার ফিটিং হবার নামগন্ধ-ও নিলোনা দুইদিনে, সোয়া পাঁচটায় বের হয়ে ছুঁচো দৌড়ানো পেট আর ব্যথায় টইটুম্বুর পা টের পেয়েছি কেবল ; বাকিসবকিছু নাম্ব, মাথার ভেতর চিন্তাগুলো সব ছিলো ভোঁতা । তাহলে মন এমন কিভাবে ? . ফিরে যেতে হয় দেড়বছর আগে। ছোটভাই একদিন স্কুল থেকে [ এটা সত্যিকারের স্কুল ই ] এসে বলে, ' আচ্ছা রাইত, তর কি ..... নামের কোনো বন্ধু ছিলো? তার আম্মু আমাদের ম্যাডাম, আমাকে অনেক আদর করেন ' ! আরেহ, ..... এর সাথে তো কথা হয়না দশবছর হলো :O এরপরে বহু ঘটনা । সেই বন্ধুটার আম্মুনি, একটা সুবাস খুবই পছন্দ করেছিলেন । পারফিউমেন্সে সেটার কেবল একপিস আটমিলিই ছিলো। দিয়েছিলাম , একদিন শেষ হয়ে গেলো । বন্ধু খুব করে চাইলো আবারো যেন এনে দিই, আমি পারলাম না । একবুক কষ্ট নিয়ে ফ্রান্স অনেক দূরে সরে গেলো । . ছয়টা মাস, খুঁজেছি তারে। কারো ঘ্রাণ কাছাকাছি হয়, কেউ একদমই মিলে যায় কিন্তু লঞ্জিভিটির নামে লবডঙ্কা, আবার কেউ নামে একদম সেইম কিন্তু ঘ্রাণে মেঘ-কাদা তফাৎ ! বন্ধুর আম্মুনি বলে নয়, রাইয়্যানের ম্যাডাম বলে নয়, মাথায় পুরো সময়টা ঘুরেছে " পারফিউমেন্সের ই একটা ঘ্রাণ, একজনের এত এত পছন্দ অথচ আমি আনতে পারতেছি না! ছি: ছিহ: " ! সেই ..... বন্ধুর গতকাল আসার কথা দোকানে । আর গতকালকেই সকাল ১০টায় ইম্পোরটার আংকেলের ফোন ' ভাই, ঐযে ঐটা এসেছে, আমি স্যাম্পল পাঠায়ে দিচ্ছি আপনার আব্বুর কাছে' । কাকতালীয়??? কো ইন্সিডেন্স ??? . আদি ও আসল "রেড রোজ" স্যাম্পল যট্টুক ছিলো, কাল হস্তান্তর হয়ে গেছে। সেইই আগেকার মুগ্ধতা, দেখা হয়ে গেছে। আজ ছিলো সেটা স্টকে যোগ করার দিন, ইয়া গাম্বুসাকৃতি ক্যান বহন করে হাতে ফোস্কা ফালানোর দিন। ফেরার পথে বৃষ্টিবাদলের সাথে মোলাকাত, একটু লাগামহীন ত হওয়াই যায়, নাকি?
রিভিউ